একটি আতঙ্কের রাত ~ মৌসুমী ঘোষ দাস





                      

[১]


রাতে পরিমল বাবু কাজে বেরিয়ে যাবার আগে গিন্নীর চাঁদপানা মুখখানা আদর করে, পই পই করে বুঝিয়ে বলে গেলেন কিছুতেই যেন তিনি ছাড়া আর অন্য কেউ এলে বাড়ির দরজা ভেতর থেকে না খোলেন। সকালে তিনি ফিরে না আসা পর্যন্ত, দরজা যেন ভাল করে বন্ধ রাখেন। পরিমল বাবুর আজ নাইট ডিউটি মানে রাতের শিফটে ডিউটি। রাত দশটা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত মোট আট ঘণ্টা কাজ। এমনিতে পরিমল বাবু বড় সাহেবকে ম্যানেজ করে মাসের মধ্যে আধিকাংশ দিন, দিনের ডিউটিই নেন। কিন্তু মাসে দুদিন অন্তত তাকে রাতে ডিউটি করতেই হয়।

স্ত্রী রাখীদেবী স্বামী বেরিয়ে যেতেই ভাল করে বার বার পরীক্ষা করে দরজা বন্ধ করলেন, জানালা গুলোও ভাল করে বন্ধ করে দিলেন। স্বামী বেরুনোর আগেই খাটের তলা, ঘরের কোনা গুলো টর্চ জ্বেলে খুব ভাল করে পরীক্ষা করে দেখে রেখেছেন। খাওয়ার জল, বাচ্চার প্রয়োজনীয় টুকিটাকি জিনিসপত্র আগেই বিছানার পাশের টেবিলে গুছিয়ে রেখেছেন, যাতে সে সবের জন্য আবার বিছানা থেকে রাখীকে নামতে না হয়। তারপর অতি সন্তর্পণে বিছানায় এসে বসলেন। তাদের একমাত্র ছোট্ট শিশু পুত্রটি অঘোরে ঘুমোচ্ছে তখন।

আসলে রাখীদেবী ছোট বেলা থেকেই উদ্ভট ধরনের ভীতু প্রকৃতির মেয়ে। কাল্পনিক ভূত-পেত্নী থেকে শুরু করে চোর-ছ্যাঁচোর এমনকি সাপ, টিকটিকি, আরশোলা, বেড়াল, কুকুর, গরু ছাগল সব কিছুতেই খামোকা ভয় পান। বেশ মনে আছে ওর, যখন কলেজে পড়তেন তখন দিনের বেলাও একা ঘরে থাকতে ভয় পেতেন। এমনকি রাতে বিছানায় মায়ের পাশ থেকে নেমে একা বাথরুম যেতেও ভয় পেতেন। কিসের ভয়? ওর মনে হত, খাটের নীচে বুঝি কেউ ঘাপটি মেরে বসে রয়েছে। যেই না বিছানা থেকে মেঝেতে পা নামাবে, অমনি বুঝি সেই কাল্পনিক ব্যক্তিটি ওর পা ধরে টান মারবে! সারাদিনের সংসারের কাজে ক্লান্ত অবসন্ন ঘুমন্ত মাকেই ঘুম থেকে ডেকে তুলতেন তখন।

ছোট থেকেই নিরিবিলি খোলামেলা সরকারি কোয়ার্টারে মানুষ কিনা! চারিদিকে গাছ-গাছালি ঘেরা কেমন একটা ছায়া ছায়া জঙ্গল জঙ্গল ভাব ছিল সেখানে। সর্বক্ষণ কেমন গা ছমছম করতো তার। তাই রাখীদেবী ভগবানকে বলতেন যেখানে প্রচুর আলো, পাশাপাশি প্রচুর বাড়িঘর, প্রচুর লোকজন আছে এমন ঘিঞ্জি জায়গায় যেন তার বিয়ে হয়।

কিন্তু এমনই কপাল যে এখন বিয়ে হয়েও সেই চারদিক খোলামেলা গাছ–গাছালি ঘেরা নিরিবিলি এলাকায় কোয়ার্টারে স্বামীর সাথে বসবাস করতে হচ্ছে। এখানে তো আবার আরেক উপদ্রব! মাঝে মাঝেই ঘরে ধারি ইঁদুর থেকে শুরু করে বেশ বড় বড় ছুঁচো, এমনকি কোয়ার্টারের সরু নালা দিয়ে সপরিবারে ঢোড়া সাপ, ব্যাঙও বিনা আমন্ত্রণে চলে আসে। এছাড়া আরশোলা, টিকটিকি তো আছেই। স্ত্রীর এ হেন ভয়ের কারণে পরিমল বাবু ঘরে বিভিন্ন রকম কীটনাশক স্প্রে করা থেকে শুরু করে কার্বলিক এসিড পর্যন্ত ছড়িয়ে রাখেন এধারে ওধারে। এসবের গন্ধে বাড়িতে শ্বাস নেওয়া দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। পরিমল বাবুর আবার এসব উগ্র গন্ধ থেকে অ্যালার্জি হয়, শ্বাস কষ্ট হয়। তবুও একমাত্র ভীতু স্ত্রীর জন্য সব সইতে হয়।


[২]



দুই বছরের বাচ্চা ছেলেটি বিছানায় ঘুমোচ্ছে। রাখী ঘরের জিরো বাল্বটা জালিয়ে ধীরে ধীরে ঘুমোতে আসেন। ইচ্ছে ছিল বড় আলো জ্বেলে ঘুমোনোর, কিন্তু চড়া আলোয় ঘুম তো আসেইনা, উল্টে মাথা ব্যথা নাকি ওই কি যেন বলে আধকপালি, সেই ব্যাথা শুরু হয়ে যায় রাখীর। আর একবার ব্যথা শুরু হলে, যতই ওষুধ খান না কেন তিনদিনের আগে নাকি সারেই না। অগত্যা নির্জন এলাকায় নিস্তব্ধ ঘরে জিরো আলোয় একা ঘুমন্ত শিশুপুত্র সহ বিছানায় শুয়ে কিছুতেই আর ঘুম আসে না রাখীর। ছাদে মাথার ওপর একটা টিকটিকি ডেকে উঠলো হঠাৎ! রাখি ভয়ে কাঠের মত হয়ে সেটার দিকে একদৃষ্টে চেয়ে রইলো। ঝপ করে যদি ওপর থেকে গায়ে এসে পড়ে! উঃ! ভেবেই শিউরে উঠলেন রাখী। একটু কিছু পরে মনেমনে আশ্বস্ত হলেন এই ভেবে যে, মশারি টাঙানো আছে, সরাসরি গায়ে তো আর পড়বে না!

এতদিন পরিমল বাবুর রাতে ডিউটি থাকলে পাশের কোয়াটারের ঝিমলি এসে রাখীর সাথে শুতো। ঝিমলি বেশ সাহসী মেয়ে। গত সপ্তাহে ঝিমলির বিয়ে হয়ে গেছে। তাই আজ আর কাউকে পাওয়া যায়নি। তাছাড়া সবাইকে তো আর বিশ্বাস করা যায় না! পরিমল বাবু পই পই করে স্ত্রীকে বোঝান, সবসময় তো আর পাহারা দেবার মেয়ে পাওয়া যাবেনা! নিজের মনেই সাহস সঞ্চয় করতে হবে। নইলে ছেলেটাও তো বড় হয়ে মায়ের দেখাদেখি রাম ভীতু হতে পারে! রাখীও বোঝেন সে কথা। কিন্তু কিছুতেই ভয় কাটে না যেন।

ছেলেটা ঘুমের মধ্যে স্বপ্ন দেখেই না কি জোরে কেঁদে উঠলো। রাখী আস্তে আস্তে ছেলের গায়ে মৃদু চাপর মেরে ঘুম পাড়িয়ে নিজেও ঘুমের চেষ্টা করলেন। হয়তো বা সারাদিনের ক্লান্তিতে ঘুমিয়েও পড়েছিলেন। হঠাৎ ঠকঠক শব্দে ঘুম ভেঙে গেল। ঘড়ির দিকে চেয়ে দেখলেন রাত একটা বাজে। কে যেন ওদের কোয়ার্টারের সামনের প্রধান দরজায় টোকা মারছে! রাখী কান পেতে ভালো করে শোনার চেষ্টা করলেন। হ্যাঁ! পরিষ্কার দরজায় ধাক্কা দেওয়ার শব্দ! এত রাতে আবার কে দরজায় টোকা দিতে পারে, ভেবে পেলেন না রাখী। আজ ওর স্বামীর রাতে ডিউটি, বাড়িতে ছোট বাচ্চা নিয়ে একা থাকবেন রাখী, এখবর বাজে লোকেরা বা চোরেরা কি জানতে পেরেছে? কে জানে হয়তো বা স্বামীকে রাতে বেরিয়ে যাবার সময় আড়াল থেকে খেয়াল করেছে! আর তাই এই মাঝরাতে এসে অসৎ উদ্দেশ্যে দরজায় টোকা দিচ্ছে!

রাখীদেবী ভয়ে জড়সড় হয়ে বিছানায় উঠে বসলেন। এবার শব্দটা যেন আরও বেড়ে গেল! ধাক্কাটা বেশ জোরে জোরে দিচ্ছে যেন! রাখীর সারা শরীর ভয়ে ফুলে গেলো। গায়ের রোম খাড়া হয়ে উঠলো। তল পেটে ব্যাথা শুরু হয়ে গেল। এই রকম ভয় টয়ের পরিস্থিতিতে ওনার আবার খুব জোরে বড়টা পেয়ে যায়। কি বিপদ! এখন কি করবেন তিনি? বেশ চেপে চুপে বসে ভাবলেন জোরে চিৎকার করে পাশের কোয়ার্টারের লোককে ডাকবেন, কিন্তু চিৎকার করতে পারলেন না। যেন বোবা হয়ে গেছেন! গলা দিয়ে কোন আওয়াজ বেরুচ্ছে না! শুধু গলগল করে ঘামছেন। ওদিকে দরজায় ধাক্কা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে!

সাহস করে বালিশের তলা থেকে মোবাইলটা বের করলেন স্বামীকে ফোন করার জন্য। কিন্তু লাইন পাচ্ছেন না কিছুতেই। কেবল ফোনের ওপ্রান্ত থেকে বলছে, ‘আপনি যার সাথে যোগাযোগ করতে চাইছেন, তার সাথে এ মুহূর্তে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না, প্লীজ একটু পরে আবার চেষ্টা করুন’। প্রচণ্ড ভয় পেয়ে রাখী কি করবেন বুঝে পেলেন না। এরই মধ্যে আবার বাচ্চাটা স্বপ্ন দেখেই বুঝি জোরে কেঁদে উঠলো। আর কি আশ্চর্য! অমনি দরজায় ধাক্কার আওয়াজটা বন্ধ হয়ে গেল! রাখী ছেলেকে বুকে নিয়ে আস্তে আস্তে ঘুম পারালেন। চুপ করে কান পেতে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দেখলেন আর কেউ ধাক্কা দিচ্ছে না। তার মানে বাচ্চার কান্নার আওয়াজে চোরটা বা বাজে লোকটা পালিয়েছে! যাক বাবা! বাকি রাতটা কোনোভাবে কেটে গেলেই হল। রাখী একটু আশ্বস্ত হয়ে ঘাম মুছে এক গ্লাস জল খেয়ে এবার নিজে একটু ঘুমনোর চেষ্টা করলেন।


[৩]



একটু তন্দ্রা মতো এসেছে আর অমনি বাড়ির পেছনের দরজায় সেই একই রকম ধাক্কার আওয়াজে তন্দ্রা ছুটে গেল। সামনের দরজা খুলতে পারলো না বলে কি বাজে চোরগুলো পেছনের দরজা খোলার চেষ্টা করছে? বাড়ির পেছন দিকে জঙ্গল মত আছে একটু। আলোও খুব কম সেদিকে। তাই কি কুকর্ম সেরে সেই জঙ্গল দিয়ে পালাবে বলে ভেবেছে ওরা? ভয়ে রাখীর গলা শুকিয়ে গেল। এতো রাতে কি উদ্দেশ্যে দরজা ধাক্কা দিচ্ছে সে আর বুঝতে বাকি রইল না রাখীর। চিৎকার যে করবেন, তা গলা দিয়ে আওয়াজই বেরুচ্ছে না! আবার স্বামীকে ফোন করে ফোনের ওপ্রান্ত থেকে সেই একই কথা শুনলেন। আছাড় মেরে ফোনটা ভেঙে ফেলতে ইচ্ছে করছে রাখীর। প্রয়োজনের সময় যদি লাইন না পাওয়া যায় তবে ফোন রাখার কোনো মানে হয়?

ভয়ে ভয়ে বিছানায় বসে ঈশ্বরের নাম জপতে জপতে নিজের মনে সাহস আনার চেষ্টা করলেন। আর তক্ষুনি হয়তো বা ঈশ্বরের কৃপায় ছোটবেলায় শোনা একটা দুঃসাহসী সত্যি ঘটনার কথা মনে পরে গেল রাখীর। ওর ঠাকুরদার বাবার কোন এক ঠাকুমা নাকি খুব সাহসী মহিলা ছিলেন। তখনকার দিনে নাকি বাড়িতে চিঠি দিয়ে ডাকাতি করা হত। সেই ঠাকুমার বাড়ি একদিন রাতে ডাকাতি করবে বলে নাকি আগেই চিঠি পাঠিয়ে জানিয়েছিল ডাকাতরা। ঠাকুরদার বাবার সেই ঠাকুমা নাকি সবাইকে একটা ঘরে নিরাপদে বন্ধ করে রেখে, সারা বাড়ি অন্ধকার করে দিয়ে, সদর দরজার একটা পাল্লা শুধু এমন ভাবে একটু ফাঁক করে রেখেছিলেন যেন একজনের বেশি দুজন একসাথে বাড়িতে প্রবেশ করতে না পারে। তারপর সেই ঠাকুমা ঘুটঘুটে অন্ধকার বাড়িতে নিজে এক বিরাট ধাঁরালো রাম দাঁ নিয়ে সেই এক পাল্লা বন্ধ দরজার আড়ালে দাঁড়িয়েছিলেন, আর যেই না একজন করে ডাকাত ঘরে ঢুকছিল আর এক কোপে ডাকাতদের মুণ্ডু কাটছিলেন। দুজন ডাকাত মরার সাথে সাথেই নাকি ভয়ে বাকিরা পালিয়ে গিয়েছিল। সেই ঠাকুমার বীরত্বের কাহিনী গোটা গ্রামে সকলের মুখে মুখে প্রচলিত হয়েছিল। আর সেই বংশের মেয়ে হয়ে কিনা রাখী এতো ভীতু! ছি ছি! ধিক্কার দিলেন নিজেকে!

নাঃ এভাবে ভয় পেয়ে মরলে তো চলবে না! কিছু একটা করতেই হবে! সাহস সঞ্চয় করে বিছানায় বসে বুদ্ধি করে আস্তে আস্তে নিজের কানের, গলার, হাতের সোনার গয়নাগুলি খুলে, তারপর ঘুমন্ত ছেলের হাতের রুপোর বালা, গলার মালা, রুপোর পায়ের তোড়া সন্তর্পণে খুলে খাটের নীচে অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মাঝে ফেলে দিলেন। নিজের যা ক্ষতি হওয়ার হবে, কিন্তু সামান্য ওই কটা রুপোর গয়নার জন্য বাচ্চা ছেলেটাকে যদি মেরে ফেলে! একবার শুনেছিল, কোথায় নাকি এক বৃদ্ধা সোনার দুল খুলে দিতে দেরী করেছিল বলে, দুষ্কৃতীরা অসহায় বৃদ্ধার কান শুদ্ধ কেটে সোনার দুল নিয়ে চলে গিয়েছিল। যদি বাচ্চার হাতের বালা খুলতে না পেরে হাত শুদ্ধ – ওহ! আর বেশি ভাবতে পারছেন না রাখী।

এদিকে ধাক্কাটা একনাগাড়ে বেড়েই চলেছে! দরজা ভেঙেই ফেলবে যেন! পা টিপে টিপে রান্নাঘর থেকে আঁশ বটিটা এনে বিছানার পাশের টেবিলে রাখলেন এই ভেবে যে, “বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচাগ্র মেদিনী” অর্থাৎ তার সাথে কিছু অপ্রীতিকর ব্যাপার ঘটার আগে তিনি প্রাণপণে বাধা দেবেনই দেবেন।

তারপর, আগের বারের মত হয় কিনা পরীক্ষা করার জন্য বাচ্চাটাকে একটা চিমটি দিয়ে কাঁদালেন, যদি বাচ্চার কান্নার শব্দ শুনে এবারো বদমাশটা পালিয়ে যায়! আর সত্যি! আশ্চর্যজনক ভাবে বাচ্চার কান্না শুনে দরজা ধাক্কার আওয়াজটা থেমে গেল! রাখী বুঝতে পারলেন, এ নিশ্চয়ই ছিঁচকে চোরের কাজ। একবার এই ছিঁচকে চোরদের সম্পর্কে শুনেছিল রাখী, এরা নাকি চুরির করার আগে শব্দ করে যাচাই করে নেয় গৃহস্থ তার বাড়িতে আছে না নেই। অথবা বাড়িতে থাকলেও জেগে আছে না ঘুমিয়ে। সেই বুঝেই নাকি তারা চুরি করে। তাই হয়তো চোরেরা দরজায় ধাক্কা মেরে পরীক্ষা করে দেখছিল।


[৪]


ঘড়িতে তখন ভোর চারটে বাজে। একা একটি ভয়ঙ্কর রাতের সাক্ষী রাখীদেবী বাকি রাতটুকু ছেলে কোলে নিয়ে বসে ঢুলে ঢুলেই কাটালেন। ঢুলতে ঢুলতে হয়তো বা ঘুমিয়েই পড়েছিলেন। সকালে স্বামী এলে দরজা খুলে দেখেন, কি আশ্চর্য! প্রধান কাঠের দরজার বাইরের দিকে নীচে প্রচুর কাঠের গুঁড়ো ঢিপির মত পড়ে আছে। আর কাঠের দরজার নীচের অংশটা কোন বড় বুনো ইঁদুর বা ছুঁচোর ধারালো নখের আঁচড়ানোর চিহ্ন। পেছনের দরজাতেও সেই একই অবস্থা! রাখী দেবী বুঝলেন, সারা রাত ধরে জংলী ধারি ছুঁচো একবার সামনের দরজায় একবার পেছনের দরজায় আঁচড়েছে। আর আঁচড়ানোর ফলে সরকারি কোয়ার্টারের ঠুনকো কাঠের দরজার পাল্লাগুলি সারা রাত ঠক ঠক করে শব্দ করেছে। সে শব্দকে রাখীদেবী কোন দুষ্ট মানুষের ধাক্কার শব্দ বলে মনে করে ভীষণ ভয় পেয়ে আতঙ্কে সারাটি রাত কাটিয়েছেন। রাখী দেবী স্বামীকে রাতের অভিজ্ঞতার কথা কিছুই আর জানালেন না। শুধু স্বস্তির শ্বাস ফেলে কপালে দুহাত ঠেকিয়ে ঈশ্বরেরে উদ্দেশ্যে একটা প্রণাম করলেন।



-----------------------------------------------------