নিগফ্রাটিস রাজ্য
সময়টা ছিল প্রথম
বিশ্বযুদ্ধের কিছু আগের। সারা বিশ্বে যুদ্ধের দামামা বাজছে। এর মধ্যে বার্মা ও
শ্রীলন্কা সংলগ্ন দুইদেশের মাঝখানে এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপে সভ্যতার উথ্থান শুরু। দ্বীপ এর নাম নিগফ্রাটিস। সভ্যতায় যুদ্ধে বীরত্বে বড়
দেশকে টপকে উপরে উঠে যাচ্ছিল এই দ্বীপ পরবর্তীতে তা বিরাট রাজ্যের রুপ নেয়। এই রাজ্যের রাজা
ছিলেন দয়ালু ন্যায়পরায়ন শাসক। দয়ালু হলে ও আবার অন্যায়কে তিনি দমন করতেন কঠিন হস্তে। কোন আপন পর
বিবেচনায় আনতে রাজী ছিলেন না অন্যায়ের শাস্তি দিতে। রানীমাতা ছিলেন সবার কাছে
দয়ালু আপন মায়ের মত। তাদের ছিল এক পুত্রসন্তান বিদ্যা বুদ্ধি সৌন্দর্য্যে যার
কোন তুলনা ছিলনা। পিদিমির আলো রাজকুমার। সে এখানকার রাজকীয় ব্যাক্তিদের চেয়ে ব্যাতিক্রম স্বভাবের।অন্য রাজকীয়
ব্যাক্তিদের মত সুরা নারী থেকে সে সবসময় দুরে থাকে। সে বেমানান ধারার রাজকুমার। অতিশয় কোমল মনের এই
প্রিয়দর্শন তরুন। তার বয়স বাড়ার সাথে প্রাসাদের অভ্যন্তরে সব অনাচার আস্তে আস্তে বন্ধ হতে শুরু
করেছে। মানুষ তো দুরের ব্যাপার কোন প্রানী কুকুর বিড়াল কাওকে আঘাত করা যেতনা তার
সম্মুখে। তার সামনে একদিন ছাগল এর জবাই হচ্ছিল ভোজন এর জন্য।রক্ত দর্শনের পর সেই যে
মাংস খাওয়া বন্ধ করেছে আর তাকে কোনদিন মাংস মুখে দেওয়ানো সম্ভব হয়নি। এতদিন তার কবিতার
বিষয় ছিল প্রকৃতি এবং ভগবান। এই প্রথম তার কবিতাতে নারী এসে ঢুকে পরেছে। এখন সকালে পরীখাতে
এসে বসার পিছনে তার আরেকটা মনোবাসনা কাজ করে প্রতিদিন। সেই অপরুপ মনোহারিনীকে
একনজর দেখা।
পিপিতা ও নিভীতক
পিপিতা ও নিভীতক দুইজন আজ
সারাদিনধরে ধানক্ষেতে মনের আনন্দে ছোটাছুটি করছে। কালকে নিভীতকের প্রস্তাবে
পিপিতা সন্মতি জানিয়েছে।প্রথমে কিছুটা দোনোমনার পরে সন্মতি দিয়েছিল পিপিতা। তবে পিপিতা র চেয়ে
নিনীভক বেশী খুশী যেন। হবেনা আবার দী্র্ঘ আটমাস ঘোরার পর পিপীতা তার দিকে মুখ তুলে
চেয়েছে। পিপিতা তাদের এই গোত্রে সবচেয়ে সুন্দরী। তার অপরুপ দেহবল্লরী যেন
প্রেমদেবী আফ্রোদিতির কথা মনে করিয়ে দেয়। তার সমস্ত শরীর যেন প্রকৃতির এক এক অপূর্ব
সৃষ্টি। তার গুনাবলীর কথা বর্ণনা করতে গেলে পুরুষদের ও গাত্রোদাহ শুরু হয়। কোন কাজে তার সজাগ
দৃষ্টি সমস্ত কাজে তার বিচরনে দেখা যায় পুরুষদের চেয়ে ক্ষমতাধর শক্তিশালী এবং অতীব
মনোহরা। এ হেন পিপিতাকে রাজ্যের সবপুরুষ পেতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক। এমনকি রাজকুমার ও
শোনা যাচ্ছে তার ব্যাপারে বিশেষ আগ্রহী। রাজকুমার তিন বিয়ে এর মধ্যে সম্পন্ন করে ফেলেছে। এরমধ্যে দুই
স্ত্রীর সঙ্গে রাজকুমারের গতপাঁচ বছরে মোলাকাত হয়নি। এটাই এই রাজ্যের প্রথা। তার নানামহ তৃতীয়
নানীকে কখনও চোখে দেখেননি। রাতের অন্ধকারে একদিন একবারের জন্য মিলিত হয়েছিলেন নানামহীর
সাথে। তার মায়ের জন্ম
হয়েছে এভাবে। মা শুধু একবার ই দেখেছেন বাবাকে বিয়ের রাতে। এখানকার প্রথা অনুযায়ী
ছেলেরা হয় বাহিরে সৈনিক হয়ে যুদ্ধে যাবে খামারে কাজ করবে ফসল ফলাবে। বেশী মেয়েসঙ্গ এখানে নীতিবিরুদ্ধ। যারা বেশী মেয়েদের
পিছনে ঘোরাঘুরি করে বাশী বাজিয়ে মেয়েদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায়। তাদের কে নিয়ে
ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা হয়। অনেক সমাজ থেকে বের করে তাদেরকে একঘরে করে রাখা হয়। এই একঘরে হয়ে
থাকাটা খুব লজ্জার এবং অপমানজনক সব পুরুষের কাছে। কাজে কোন পুরুষের যদি কোন
মেয়েকে পছন্দ ও হয় দৈবাৎ আসা যাওয়ার পথে তারা তাদের মাকে এবং দ্বিতীয় রাজকীয় ঘটককে
পত্র দেয় ওই মেয়ের প্রনয়প্রার্থী হিসাবে। সেই নিভিতক গোত্রহীন একঘরে হিসাবে পরিচিত হল
আসা যাওয়ার পথে ক্রমাগত পিপিতাকে তার হৃদয়ের বাসনা প্রকাশ করতে গিয়ে। আস্তে আস্তে
পিপিতাকে খেয়াল করতে বাধ্য করল নিভিতক। নিভিতক এর সম সাময়িক যুবক সব ঈর্ষান্বিত হয়ে
পড়ল বলা বাহুল্য। পিপিতার জন্য কমকরে হাজার কোটি প্রস্তাব চলে গিয়েছে ঘটক নরডিং এর কাছে।কেননা পিপিতাকে এই
ছন্নছাড়া রামছাগল নিভিতক পেয়ে যাবে কার ও পক্ষে মেনে নেওয়া কষ্টের। নরডিং যখন দেখল
রাজকুমারের প্রস্তাব ও এখানে সে বাকী প্রস্তাব গুলি না পড়েই ময়লার বাক্সে ফেলে
দিয়েছে। ক্রমাগত সে চেষ্টা করছে পিপিতার মা বাবার মন গলাতে। গলানোর কিছুই নাই আসলে। পিপিতার মা বাবা
আনন্দে সন্মোহিত হয়ে আছে বলা যায়। তাদের মেয়ে রানী হবে এই আনন্দে দুইজনে মশগুল। কিন্তু যাকে নিয়ে
এই আনন্দের কল্পনা সেই পিপিতা রাজকুমারের কথা শুনলে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে। আমি যেকোন পুরুষের
একনম্বর স্ত্রী হতে চাই। ইয়াক মনে হলে বমি পায়। আমার আগে সে অন্য মেয়েকে
স্পর্শ করেছে। মাবাবা অসহায়ের মতই হেসে ফেলে। তাছাড়া নিভিতককে কে আমি আমার মন দিয়েছি। বলল সে জেদের সুরে। নিভিতক তো এখন ও
নরডিং কে কোন প্রস্তাব দেয়নি মামনি মা বাবা বোঝানোর চেষ্টা করে। সেটার দরকার নাই। ও আমাকে সরাসরি
প্রস্তাব দিয়েছে বলল পিপিতা রাগতভাবে। মাবাবা এবার আঁতকে উঠে। কেননা এভাবে প্রস্তাব এখানে
নিষিদ্ধ অনাচার বন্ধ করতে। বাচ্চা তুমি নিভিতকের জীবন বিপন্ন করে তুলছ। তোমরা সরাসরি দেখা
সাক্ষাৎ করোনা এভাবে। আমরা দেখছি কি করা যায় তোমার জন্য। মাবাবা দুইজনে শংন্কিত
চিত্তে ভাবছেন কি করা যায়। তাদের এই একটি মেয়ে। মেয়ের কোন ইচ্ছাই তারা কখন ই অপূর্ন রাখেন না। কিন্ত এই ব্যাপারে
কি করবেন ভেবে ও কূল পাচ্ছেন না তারা।
তিউনিশিয়া ও
রিশিথিন
সারা বিকাল এই হ্রদে চষে
বেরিয়েছে দুজনে। তিউনিশিয়া ও রিশিথিন নাম দুজনের। উড়তে উড়তে একসময়ে একজনের পাখায় ধানের শীষের আচড় লেগে গেল। পাখা দুমড়ে
ব্যাথায় কঁকিয়ে উঠলো এবার ও। তার সাথে আছে আরেকজন। নাম রিশিথিন। সে এই গোত্রের
দলপতির ছেলে। সবে তার বয়স সতের। সে নিজেকে এখন ই বেশ হোমড়া চোমড়া মনে করছে। দেখতে সে
প্রচলিত সাধারনের তুলনায় অনেক বেশী
সুদর্শন। অনেক মজবুত শক্ত সমর্থ্য ও বটে। সকল প্রধান অভিযানে সে ই নেতৃত্ব দেয় এই বয়সে ই। তার সঙ্গী
তিউনিশিয়া তাদের গোত্র থেকে একটু দুরে আরেক সম্প্রদায়ের। দুইজন এর মন দেওয়া নেওয়া
বাগদান এখন অনেকটা ইতিহাস এর মত দুই সম্প্রদায়ের সকলের জানা। এ নিয়ে দুই গোত্রের মধ্যে
যুদ্ধ রক্তক্ষয়ের দুই দলপ্রধান অভিভাবক রা এ সম্পর্ক মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল পরে। অনেক দিন পরে এই
দুই প্রাণ মিলেছে আজ সোনালী ধানের ক্ষেতে। প্রচলিত নিয়ম অনুসারে এখানে এই বিয়ের পূর্বে
নারী পুরুষ মোলাকাত অনুমোদন করেনা। এখানে নারীরা একমহলে পুরুষ রা থাকে আরেক মহলে। পুরুষ নারী এক
মহলে থাকলে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে অহেতুক ঝগড়াঝাটি মারামারির সুত্রপাত দেখে পরে
রানীমাতা নিজে চিরস্থায়ী ভাবে এই সমাধানের পথ বেছে নিয়েছেন। রানীমাতার দুইজন উপদেষ্টা
আছেন একজন নারী একজন পুরুষ। দুজন ও রানীমাতার অনুমতি ব্যতিরেকে একে অপরকে দেখেনা, কথা বলেনা এমনকি কর্মর্দনের
অনুমোদন দেওয়া হয়না। কেবলমাতার রানীমাতার একজন প্রেমিক বা স্বামী আছেন তা শুধু
বংশরক্ষার ই জন্য। নিয়ম অনুযায়ী নারী সন্তানকে শিক্ষা দেওয়া সকল রণ কৌশল অস্র চালনা যুদ্ধ
বিদ্যা। পুরুষ সন্তানদের সাধারনত বনে ফেলে রাখা হয়। দুই একসময় দুই একজন শিশু
পুরুষ সন্তান রানীমাতার দয়া অর্জনে সমর্থ হন। কখন ও কোন একজন
শিশুপুত্রের মুখ দর্শনে রানীমার সন্তান বাৎসল্য চলে আসে। রিশিথিন এরকম একজন সৌভাগ্য
অর্জন কারী পুত্র রানীমাতার। সে সব কিছু ই পায় যা এখানের সকল কন্যা সন্তানরা রাজ্যের
উত্তরকারী পায়। এই সম্প্রদায়ে রানীমাতা প্রধান। উনি যা বলেন তাই আইন। তিনি তার সম্প্রদায়ের
সবচেয়ে বড় বীর পন্ডিত রন্দাজ এর চালায় রেখে রিশিথিন এর সকল শিক্ষার ব্যাবস্থা
নিশ্চিত করেছেন। এ রিশিথিনকে কামনা করেনা এমন কোন ও মেয়ে নাই দুই সম্প্রদায়ে। রিশিথিন কখন ই এসব
খেয়াল করেনা, মেয়েদের এসব
অনুরাগকে পাত্তা দেয়না। শুধু তিউনিশিয়া কিভাবে কখন তার মন যে অধিকার করে বসেছে খোদ
রিশিথিনের ছিল তা অজ্ঞাত। বস্তুত এ রিশিথিন এক চারিত্রিক দূর্বলতা। তিউনিশিয়ার কাছে
আসলে সে নত হয়ে পড়ে। নাহলে সে আগ্রাসী মনোভাব এর একজন বড় যোদ্ধা। তার আবেগের কাছে
রানীমাতা নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন। রিশিথিনকে অনুমতি দিয়েছেন মাঝেমাঝে তিউনিশিয়ার
সাথে মিলিত হওয়ার। রিশিথিন যত্ন করে প্রেয়সীর ক্ষতে মলম লাগিয়ে দিল। তিউনিশিয়া আরাম লজ্জায় চোখ
বন্ধ করে ফেলল। ওর বয়স মাত্র চৌদ্দ। এখন ও কুমারী। পুরুষ স্পর্শের অনুভব এই প্রথম ই তার জীবনে।
রাজকুমার পিদিমির
রাজকুমার পিদিমির আজ অনেক
সকালে ঘুম থেকে উঠেছে। তার প্রথম বিয়ে হয়েছিল চারবছর বয়সে। এই স্ত্রীকে রাজকুমার এখনও
দেখেননি। পারিবারিক ও রাজকীয় প্রথা অনুযায়ী মাত্র পচিশ বছরে তার তিনটি বিয়ে যদি ও
সম্পন্ন হয়েছে এদের কাওকে পরিপূর্ণভাবে রাজকুমার না চিনে মানসিকভাবে না দৈহিকভাবে। রাস্তায় যদি কখন ও
দেখা হয়ে যায় সে নিশ্চিতভাবে বলতে পারবেনা কোনজন তার স্ত্রী। তার প্রাসাদ সংলগ্ন পরীখা
তে প্রতিদিন সে এসে বসে। কিছুক্ষনের জন্য প্রকৃতির রুপসুধা অবলকন করতে করতে সে কবিতা
রচনা করে। সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে চলল সেই
মেয়েটিকে আজ এখনও দেখা যায়নি। কিছুটা হতাশ হয়ে পিদিমির অন্য কাজে মনোনিবেশ করার চেষ্টা
করল। তার পরীখাতে কিছু
মাছ সে ছেড়ে রেখেছে যেগুলির সাথে কিছুক্ষন খেলা করা তার প্রাত্যহিক রুটিনের মধ্যে
পড়ে। হঠাৎ একটা খরগোশ
এসে লাফ দিয়ে তার কোলে ঢুকে পড়ে। কিরে আমার টুটটুট তুই কোথা থেকে এলি এত মনোহর রুপ নিয়ে সে
খরগোশটাকে নিয়ে আদর করতে করতে চোখ পড়ে যায় সামনের পিপিতার দিকে। সম্ভবত খরগোশটি তার। খরগোশের পিছনে
ছুটতে ছুটতে অন্যমনস্কভাবে প্রাসাদের আঙিনায় চলে এসেছে সে। বেশভূষায় বূঝল পিপিতা এই
তাহলে রাজকুমার। পিপিতা এই প্রথম রাজকূমারকে দেখল।তার ধারনা ছিল হিংস্র বয়স্ক চেহারার কাওকে
দেখবে। এ রীতিমত তরুন। অতিশয় সুদর্শন দেখতে চোখে মুখে অপরুব মায়াবী ভাব। কিছুক্ষন দুইজন
দুজনের দিকে মুগ্ধ পলকহীন চোখে তাকিয়ে রইল। এই খরগোশ তোমার? মায়াবী স্বরে পিদিমির জিজ্ঞাসা করে। মাথা নেড়ে তার জবাব করে। দুইজনে কিছুক্ষন
চুপচাপ পরিখার পাশে বসে থাকে। তোমার বিয়ে ঠিক হয়েছে শুনলাম নিভিতকের সাথে? রাজকুমার আগ্রহে কাছে এসে
জিজ্ঞাসা করে। পিপিতা এখন মনে মনে পিদিমিরের এর জন্য বেদনা অনুভব করে। এই প্রশ্নের জবাব দিতে
অস্বস্তি বোধ করে। নিভিতক এমন করছিল যে ওকে বাচাতে গিয়ে আমাকে রাজী হতে হয়েছিল কুমার। অনেকটা জবাবদিহিতার
ভঙ্গিতে কথা বলে। অসুবিধা নাই তুমি সুখী থাকলে হল।চুল নেড়ে দিল হাত দিয়ে।আমি সবসময় তোমাকে আমার
কবিতাতে পাব। আমার কবিতা থেকে তোমাকে কেও ছিনিয়ে নিতে পারবেনা। বলে মধুর করে হাসল।আমি যে বিয়ের
প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম তাকি তুমি জানতে? নরডিং চাচা বললেন তুমি রাজী না। এখন লজ্জা আর দূঃখে পিপিতা কিছুক্ষন ম্রিয়মান হয়ে থাকে। আপনার আরও তিনজন
স্ত্রী আছেন শুনে আমি রাজী হইনি রাজকুমার।আর কোন কারন নাই। তখন তো আমি আপনাকে জানতামনা। বলল বিষন্ন
সমর্পণের সূরে। তুমি তো ভারী অব্ভুত মেয়ে। রাজকুমারের প্রস্তাব প্রত্যাখান কর। তাহলে কি এখন আবার আমার
প্রস্তাব পূনর্বিবেচনা করবে কৌতুকের স্বরে পিদিমির বলে। না এখন আর তা সম্ভবনা
কুমার। আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ নিভিতকের সাথে। বিষন্নভাবে মাথা নেড়ে বলে পিপিতা। দুজন আর ও কতক্ষন
মাছদের খেলা দেখে পরীখার পাশে বসে। কতক্ষন পরে সচকিত হয়ে উঠে দাড়ায় পিপিতা। সন্ধা হয়ে আসছে
আমাকে যেতে হবে কুমার। এবার আমায় বিদায় দিন। বিষন্ন আবেগঘন গলায় বলল
পিপিতা। পিদিমির উঠল এবং হাটতে থাকল দুজন একসাথে। কিছুক্ষনের এই নীরব হাটা
আজ তাদের মধ্যে এক অচ্ছেদ্য বন্ধন তৈয়ারী করে দিল। পিপিতার বাসার কাছে পৌছতে
সে বলল কুমার এখন ফিরে যান। আমার বাড়ীতে চলে এসেছি। দুইজনের দিকে দুইজনের দিকে
তাকিয়ে রইল কিছুক্ষন। যে যার বাড়ীর দিকে রওনা করল। কিছুক্ষনের মধ্যে পিছন
থেকে কার ও ডাক শুনে থমকে দাড়াল। পিছনে ফিরতে দেখল পিপিতা আবার দৌড়াতে দৌড়াতে আসছে। কাছে আসতে হাতের
খরগোশটি দিয়ে বলল এটা আপনি নিন। আমি কি আপনাকে একটা অনুরোধ করব রাজকুমার। একটা কেন অনেকগুলি
কর। সব শুনতে চাই। গাঢ় আবেগের স্বরে
সে বলল। আপনি আপনার স্ত্রীদের ভালবাসতে শুরু করুন আমাকে যেভাবে বাসেন। পিদিমির হেসে ফেলল
আনন্দে।তুমি অনেক চমৎকার ভাল একটা মেয়ে পিপিতা। ঠিক আছে আমি চেষ্টা করব। ওদের কার ও মুখ অবয়ব এখনও
দেখিনি।অন্ধকার রাতে এক দেড়ঘন্টার দেখা ওদের সাথে। ওদের আগে তোমার মুখ অবয়ব
ব্যাক্তিত্বের সাথে পরিচিত হয়ে গেছি। দুইজনে চোখের অশ্রজলে ভাসতে ভাসতে দুইজনকে বিদায় দেয়।
তিউনিশিয়া ও
রিশিথিন
দুজনের পরিচয় হয়েছিল এক
নাটকীয় ঘটনার মাধ্যমে। সেদিন তিউনিশিয়া বসে ছিল তার প্রিয় পরীখায়। বিচিত্র সব ভাবনা
তার মনে আনাগোনা করছিল সেদিন। ভাবছিল কে আমার বাবা? এইসব চিন্তার সময় সে বেশ বিষন্ন বোধ করে। তখন ই তার পরীখার
জলে কোন ও পতনের ঝপাং আওয়াজ কানে এলো ওর। তার সঙ্গে ছুটন্ত পদশব্দ। কিছু প্রহরীকে পেলো পরিখার
পাশে দৌড়াদৌড়ি করছে এবং এদিক ওদিক দেখছে কোন কিছুর অনুসন্ধানে। প্রহরীরা তাকে
সতর্ক করে দিল এই মর্মে কোন ও বহিরাগত আগন্তক প্রাসাদে ঢুকে পড়েছে আর সম্ভবত
পরীখার পাশে কোথাও লুকিয়ে আছে। এই আগন্তক টি ছিল আমাদের রিশিথিন। তিউনিশিয়ার গান আর নুপুরের
শব্দে সে একটু কৌতুহলী হয়ে এদিক সেদিক উকি ঝুকি দিচ্ছিল। প্রহরীর পদশব্দ পাওয়ায়
উপায়ান্তর না দেখে পরীখায় ঝাপিয়ে পড়ে। তারপর কিছুক্ষন একটা বড় গাছের আড়ালে নিজেকে
লুকিয়ে নেয়। প্রহরীরা চলে যাওয়ার পরে পরীখা থেকে উঠে এসে এক গাছের নীচে বসে কিছুক্ষনের
জন্য। মনোরম প্রাকৃতিক
বাতাস সেবনে একসময়ে ঘুমিয়ে ও পড়ে। এদিকে তিউনিশিয়া হাটতে হাটতে ওই গাছের নীচে পৌছে যায়। ঘুমন্ত রিশিথিনকে
তার রমনীচিত্তে প্রবল আলোড়ন শুরু হয়ে যায়। কে এই
অপরুপ পুরুষ? এখানে তাদের
প্রাসাদের অভ্যন্তরে কিভাবে আসলো?
এ কে
কি প্রহরীরা খুঁজছে? তার সমস্ত চিত্ত
অনাত্মীয় পুরুষের জীবন রক্ষায় ব্যাকুল হয়ে উঠল। রিশিথিন ও ঘুম ভেঙ্গে জেগে
উঠল সেই সময়। দুজনে দুজনকে দেখে অভিভূত হয়ে পড়ল স্নেহে আবেগে। প্রহরীর পদশব্দ আবার ও
শুনতে তিউনিশিয়া তার বড় আলখেল্লা ছুড়ে দিল রিশিথিনের দিকে নিজেকে আবৃত করতে। সবার চোখ এড়িয়ে
নিজের বাসস্থানে নিয়ে এল রিশিথিনকে তিউনিশিয়া। তিনদিন এভাবে লুকিয়ে রাখতে
সমর্থ হলে ও চতুর্থ দিন রাজমাতা পাকড়াও করে ফেললেন তাকে। প্রহরীর হাতে তুলে দেওয়া
হল। তাকে দোষী
সাব্যস্ত করে মৃতুদন্ডের নির্দেশ দেওয়ায় রিশিথিনের মা ক্ষেপে আগুন হয়ে গেলেন। তিনি ও যুদ্ধের
ঘোষনা দিলেন অবিলম্বে তিউনিশায়াদের সম্প্রদায়কে। এক মাস যুদ্ধ ও হলো অনেক
সৈন্য মারা গেল প্রচুর হতাহত ও হলো। এর মধ্যে এই দুই সম্প্রদায়ের মাতার চৈতন্যোদয় হলো যখন
তিউনিশিয়া রিশিথিন দুজন দুজনের প্রতি প্রবল প্রনয়েচ্ছা প্রকাশ করলো। তারা যুদ্ধ থামিয়ে
দিয়ে পরস্পরের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করলো একে অপরের সন্তানদের মেনে নিতে সম্মত
হলো। এর পর ও পাঁচ মাস
পার হলো। দুই সম্প্রদায় ওদের সম্পর্ক মেনে নিয়েছে। বিয়েতে ও সম্মতি হয়েছে দুই
সম্প্রদায়। আস্তে আস্তে পরিনয়ের দিন ও এগিয়ে এল একদিন।
পিপিতা, নিভিতক পিদিমির
রঙধনুর সাতটা রঙে যেন
বিচিত্র রকমের সুন্দর করে সেজেছে প্রকৃতি আজ। আজকে বিয়ে পিপিতা আর
নিভিতকের। সকাল থেকে দেখা যাচ্ছে ভার মুখে পিপিতা ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাকে দেখে মনে হওয়ার কোন
উপায় নাই আজ তার পরিনয় তার পছন্দের পাত্রের সাথে। একরাতের মধ্যে তার রুপরস
যেন সব চুরি হয়ে গিয়েছে।
“কি হয়েছে মা তোমাকে এত
উন্মনা দেখাচ্ছে কেন”? বাবা এসে কোমল
স্বরে জিজ্ঞাসা করে।
মা বলেন “তোমার পছন্দমত তো
সবকিছু করেছি মা তবে কেন হাসিমুখে থাকছনা”। আমার কথা না শুনে তোমাদের পছন্দমত করলে বোধ হয়
ভাল হত বিড়বিড় করে সে বলে। মা সচকিত হয়ে উঠলেন কি বললে মা কি বললে। না কিছু না। সে পিদিমিরের জন্য
এত বিষন্ন বোধ করছে কার ও সাথে স্বাভাবিকভাবে কথা বলা সম্ভব হচ্ছেনা। দৌড়ে উপাসনার ঘরে
আসল।মায়ের পায়ের নীচে
নিজেকে সঁপে দিল। গভীর প্রার্থনায় নিজেকে নিমজ্জিত করে রাখে নিজেকে। মা বাবা উকি দিয়ে মেয়ের
অবস্থা দেখে স্নেহের হাসি হাসে।
নিভিতককে আজকে সুদর্শন মনে
হচ্ছে বরের পাগড়ি পোষাকে। ভাই বোনরা তাকে নিয়ে বেশ গর্বিত। এই গোত্রের সবচেয়ে সুন্দরী
মেয়ের মন কেড়েছে তাদের ভাই। মা বাবা বারবার স্নেহে কপালে চুম্বন করে যাচ্ছে।মনে মনে সে অনেকটা
আত্মহারার মত হয়ে আছে।
বাবার বটিকাতে কাজ হয়েছে। নিভিতক খুব চালাকি
করে একদিন মিষ্টি পানির সাথে খাইয়ে দিয়েছে পিপিতাকে। জটাবু বন্ধন করে চুলের
বিনুনিতে। এই বিনুনীর জন্য সে কখন ও তোকে ছেড়ে যাবেনা দেখিস।বাবা নিশ্চয়তা দিল।একদিন কাজের ফাকে
মাথায় হাত চুলে গিট দিয়ে সে বিনুনী পাকিয়ে দিয়েছে। এই বিনুনী কখন ও খুলে
ফেলনা পিপিতা। এ আমাদের বন্ধন মনে করবে। পিপিতা হাসল নিভিতকের ছেলেমানুষীতে। আমি চুল আচড়াবনা ?কি বলে পাগল। বিনুনী মনে হয় এখন
ও পিপিতার মাথায় থাকার কথা ভাবছে নিভিতক। চল চল সবাই সময় হয়েছে তাড়া করতে থাকে আত্মীয়
স্বজন। অনেক ঘোড়ার গাড়ী আনানো হয়েছে। সবগুলিকে ফুল রকমারী ফূতি ব্রোকেডে সাজানো হয়েছে। বরের গাড়ীতে ছিটিয়ে
দেওয়া হয়েছে সুগন্ধি গোলাপ পানি। সবমিলিয়ে বেশ জমজমাট আনন্দমূখর পরিবেশ। মাত্র একমাইলের দূরত্বে
পিপিতার বাড়ী। তারা পৌছে গেল বলে।
হঠাৎ খুব জোরে হৈ হৈ রৈ রৈ
আওয়াজ শোনা গেল। নিভিতকদের সব গাড়ীগুলিকে কয়েকশত মুখোশধারী লোক এসে ঘিরে ফেলল। নিভিতককে গাড়ী থেকে
নামিয়ে ঠেলতে ঠেলতে তাদের একজনের ঘোড়ায় বসিয়ে পালিয়ে গেল অতি দ্রুতগতিতে। মাবাবা চিৎকার করার
ও সুযোগ পেলনা আমার ছেলেকে ছেড়ে দাও। ওর বিয়ে আজ। তার আগে যেমন অতর্কিতে হামলা চালিয়েছিল তেমনি অতর্কিতে তারা
উধাও হয়ে গেল শুধু বরের পোষাকে সজ্জিত নিভিতক কে নিয়ে। মা চিৎকার করে শাপ শাপান্ত করছেন। ওই অলুক্ষুনে মেয়ের সাথে
কেন যে বিয়েতে রাজী হলাম। বিয়ের আগে আমার ছেলেটারে শেষ করে ফেলছে। ওগো আমার নিভিতককে
কেও ফিরিয়ে নিয়ে আস। আহাজারীর মত চিৎকার করে কাঁদছে। নিভিতকের দুইভাই স্বান্তনা দিতে থাকে। চিন্তা করবেন না আম্মা আমরা
ঘোড়ার পায়ের দাগ অনুসরন করে যাচ্ছি। আমরা খুজে বের করে ফেলব অবশ্যই।
আরেকজন বলল আপনারা বিয়ে
বাড়ীতে গিয়ে সব ম্যানেজ করেন।আমরা আসছি।তাছাড়া আজ রাতে আরেকটা ভাল লগ্ন আছে।নাহলে পরের লগ্নে বিয়ে হবে।
খবরদার এই বিয়ের নাম মুখে আনবিনা। অলুক্ষনে মেয়ে।
দুঃখের মধ্যে দুইভাই হেসে
ফেলল।
আপনি
দেখি আম্মা বিয়ের আগে খাটি শাশুড়ী হয়ে গেছেন।
দুই ভাই ঘোড়ার পায়ের দাগ
দেখে দেখে চলতে লাগল।
বিকাল গড়িয়ে সন্ধা। দ্বিতীয় লগ্ন বয়ে
যাচ্ছে। এখনও নিভিতক কে পাওয়া য়ায়নি। দুইভাই টানা তিন ঘন্টা এদিক ওদিক ঘোড়া চালিয়ে কোন লোকালয়ের
অস্তিত্ব খুজে পেলনা। এমনকি কিছু রাস্তা অতি্ক্রম করার পর ঘোড়ার খুরের দাগ ও খুজে
পেলনা। বাতাসে পায়ের দাগ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। তারা হতাশ হয়ে বাড়ী অভিমূখী রওনা হল।
পিপিতাকে মনে হচ্ছে
সম্রাজ্ঞীর মত কনের পোষাকে। সবাই অস্থির হয়ে অপেক্ষা করছে বরের। দ্বিতীয় লগ্ন বয়ে যাচ্ছে
পিপিতার বাবা মা তাগাদা দিল।
আরও একঘন্টা পরে অলৌকিকভাবে
যদিও এটা অনিবার্য হওয়া উচিত বিয়ে হয়ে গেল পিপিতা ও পিদিমিরের। লগ্নভ্রষ্টা না
হওয়ার জন্য রাজকুমার হাসিমুখে পিপিতাকে বিয়ে করে ফেলল।
তিউনিশিয়া ও
রিশিথিন
সব ঠিক হওয়ার পর ও এই পরিণয় বাস্তব রুপ পায়নি। এর পরে এক দুইদিন নয় আর ও কিছু বছর পরের কথা। রিশিথিন এখন বেশ শক্ত সমর্থ যুবা। সে সকল সেনাদলের প্রধান। তার বীরত্ব এর জয়ের গাঁথা মানুষের মুখে মুখে। রিশিথিন ও এখন এই যুদ্ধ জয় নিয়ে ব্যাস্ত থাকে বেশী। এক সৈনিক কাগজ কলম এগিয়ে দিল আজকের ঘোষনানামা দিল দরখস্তের জন্য। দক্ষ হাতে সাইন করে দিল। এখন মনে পড়েনা কখন ও এই হাতে এই কাপড়ে শুধু তিউনিশিয়ার রুপ বন্দনার বিবরণ থাকতো। আর তিউনিশিয়া ও এই গোত্রের প্রথা অনুযায়ী তার মা রাজমাতার মতই তাদের সম্প্রদায়ের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য নিজেকে উপযুক্ত করতে থাকে। যুদ্ধ বিদ্যা কৌশলে নিজেকে পারদর্শী করতে থাকে। তার ও এখন অল্প সময়ের জন্য ই মনে পড়ে অপরুপ যুবক রিশিথিনকে। তাদের মধ্যে এই বিচ্ছেদ কেন বা কি কারনে তা আপাতত জানা যায়নি। বাস্তব ভাবে ভাবতে গেলে এই বলা যায় দুজন ই তাদের সম্প্রদায়ের বৃহত্তর স্বার্থে হৃদয়ের আকংঙ্খার দাফন করেছিল।
শেষ অধ্যায়
বাসররাত আজকে পিপিতা ও পিদিমের। দুইজনে চোখ মুখে হাসি আনন্দের উচ্ছাস এ বলে দেওয়া যায় এই বিয়েতে দুইজনে আনন্দিত। শুধু পিপিতা মাঝেমাঝে একটু অন্যমনষ্ক হয়ে যাচ্ছিল।
কি ব্যাপার আমার মনোহারিনী বারবার কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে। পিপিতার গালে টোকা মেরে বলে পিদিমির।
নিভিতকের কথা ভাবছিলাম। কি হল বলতো ?ওর কোন বিপদ হলোনাতো? চিন্তান্বিত দেখায় তার মুখ।
চিন্তা করোনা। সে ভাল আছে নিরাপদে আছে। এতক্ষনে নিশ্চয় সে তার বাড়ীতে পৌছে বলল পিদিমির হেসে। মানে এতক্ষনে ঝটকা দিয়ে উঠে দাড়াল পিপিতা। কি বলছ কুমার?
পিদিমির উঠে প্রেয়সীর জানুতে মাথা রাখল। মাপ চাই প্রিয়তমা। তোমাকে হারানোর কথা মনে করে পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম। তুমি বিহীন জীবন কল্পনা করতে পারিনা আমার পিতা।
শুনে স্বাভাবিক সংস্কারে প্রথমে চিৎকার করে উঠে পিপিতা। ওহ ভগবান আমি ভাবতে পারছিনা তুমি পিদিমির এত বড় অন্যায় কাজ করছ।
তোমার জন্য। শুধু তোমার জন্য। যদি বুঝতাম তুমি নিভিতককে ভালবেসে বিয়ে করছ তবে কখনই এই অন্যায় করতাম না। তোমার দৃষ্টিতে কালকে আমি আমার জন্য অনেক ভালবাসা দেখেছি। সেই ভালবাসাই আমাকে এই কাজ করতে ইন্ধন যুগিয়েছে। শুধু চারঘন্টার জন্য নিভিতককে আমার প্রাসাদের একরুমে আটকে রেখেছিলাম। ভেবে দেখ ওর সাথে তুমি সুখী হতে পারতেনা। পিপিতার মন এখন ভাগ হয়ে গিয়েছে দ্বিমুখী চিন্তায়। বুঝতে পারছেনা সে অন্যায় হয়ে গেলনা তো তাদের? এটা ঠিক যে সে এখন ভালবাসে পিদিমিরকে। আহ! দীর্ঘনিশ্বাস বেরিয়ে এল বুকের ভিতর থেকে। কেন যে এত দোটানা মনের মধ্যে সবসময়। বলাবাহুল্য এই কথা হয়তবা পৃথিবীর সবমেয়ে ই মনের কথা।
তারপর ও একসময় তারা সুখে থাকতে শুরু করল
আমার গল্প ফুরালো
নটে গাছটি মুড়ালো।
আরজু মুন জারিন: পরিবারপ্রদত্ত নাম হোসনে আরা আরজু। জন্ম ঢাকা মতিঝিল শিক্ষাগত যোগ্যতা
রসায়নে স্নাতকোত্তর । কানাডিয়ান নাগরিক। কাজ করছেন বর্তমানে টরেন্টোর
কোরসিলেট পাবলিক স্কুল এ সহকারী শিক্ষিকা হিসাবে । লেখার সাথে সখ্যতা সেই অল্প বয়স
থেকেই। কলেজ জীবনে দেয়াল ম্যাগাজিন এ লিখেছেন। ভালোবাসেন রহস্য এবং সায়েন্স ফিকশন
লিখতে। খুব সহজ ভাবে ভাবতে গিয়েও বারে বারে হারিয়ে যেতে ভালোবাসেন রহস্যে মোড়া
পৃথিবীর আদিম সভ্যতায়। প্রকাশিত গ্রন্থ : ভূতের গলি টান, দশদিগন্ত, রাঙামাটি, অভিযান, সত্য বল সুপথে চল, দরজার আড়ালে [কবিতার
বই] আনন্দ বেদনার কাব্য